ওযু করার নিয়ম বাংলা
ওযু করার নিয়ম
১- নামাযী প্রথমে মনে মনে ওযুর নিয়ত করবে। কারণ নিয়ত ছাড়া
কোন কর্মই শুদ্ধ হয় না। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১নং)
২- ‘বিসমিল্লাহ্’ বলে ওযু শুরু করবে। কারণ শুরুতে তা না বললে ওযু হয়
না। (আবূদাঊদ, সুনান ৯২নং)
৩- তিনবার দুইহাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেবে।হাতে ঘড়ি, চুড়ি, আংটি
প্রভৃতি থাকলে তা হিলিয়ে তার তলে পানি পৌঁছাবে। আঙ্গুল দিয়ে
আঙ্গুলের ফাঁকগুলো খেলাল করবে। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী,
সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, মিশকাত ৪০৭নং) এরপর পানির পাত্রে
হাত ডুবিয়ে পানি নিতে পারে। (বুখারী, মুসলিম, সহীহ ৩৯৪নং)
প্রকাশ যে, নখে নখ পালিশ বা কোন প্রকার পুরু পেন্ট থাকলে তা
তুলে না ফেলা পর্যন্ত ওযু হবে না। পক্ষান্তরে মেহেদী বা আলতা
লেগে থাকা অবস্থায় ওযু-গোসল হয়ে যাবে।
৪- তারপর ডানহাতে পানি নিয়ে ৩ বার কুল্লি করবে।
৫-অতঃপর পানি নিয়ে নাকের গোড়ায় লাগিয়ে টেনে নিয়ে বামহাত
দ্বারা নাক ঝাড়বে। এরুপ ৩ বার করবে। তবে রোযা অবস্থায় থাকলে
সাবধানে নাকে পানি টানবে, যাতে গলার নিচে পানি না চলে যায়।
(তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান ৮৯, মিশকাত ৪০৫, ৪১০নং)
অবশ্য এক লোট পানিতেই একই সাথে অর্ধেক দিয়ে কুল্লি করে বাকি
অর্ধেক দিয়ে নাক ঝাড়লেও চলে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৩৯৪নং)
৬- অতঃপর মুখমন্ডল (এক কান থেকে অপর কানের মধ্যবর্তী এবং
কপালের চুলের গোড়া থেকে দাড়ির নিচের অংশ পর্যন্ত অঙ্গ) ৩ বার
পানি লাগিয়ে দুইহাত দ্বারা ধৌত করবে। (বুখারী ১৪০নং) এক লোট
পানি দাড়ির মাঝে দিয়ে দাড়ির ফাঁকে ফাঁকে আঙ্গুল চালিয়ে তা
খেলাল করবে। (আবূদাঊদ, সুনান, মিশকাত ৪০৮নং) মহিলাদের কপালে
টিপ (?) থাকলে ছাড়িয়ে ফেলে (কপাল) ধুতে হবে। নচেৎ ওযু হবে না।
৭- অতঃপর প্রথমে ডানহাত আঙ্গুলের ডগা থেকে কনুই পর্যন্ত এবং
তদনুরুপ বামহাত ৩ বার (প্রত্যেক বারে পুরোহাতে পানি ফিরিয়ে
রগড়ে) ধৌত করবে।
৮- অতঃপর একবার মাথা মাসাহ্ করবে; নতুন পানি দ্বারা দুই হাতকে
ভিজিয়ে আঙ্গুল গুলিকে মুখোমুখি করে মাথার সামনের দিক (যেখান
থেকে চুল গজানো শুরু হয়েছে সেখান) থেকে পিছন দিক (গর্দানের
যেখানে চুল শেষ হয়েছে সেখান) পর্যন্ত স্পর্শ করে পুনরায় সামনের
দিকে নিয়ে এসে শুরুর জায়গা পর্যন্ত পূর্ণ মাথা মাসাহ্ করবে।
(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৩৯৪নং) মাথায় পাগড়ি থাকলে তার উপরেও
মাসাহ্ করবে। (মুসলিম, মিশকাত ৩৯৯নং)
৯- অতঃপর আর নতুন পানি না নিয়ে ঐ হাতেই দুই কান মাসাহ্ করবে;
শাহাদতের (তর্জনী) দুই আঙ্গুল দ্বারা দুই কানের ভিতর দিক এবং দুই
বুড়ো আঙ্গুল দ্বারা দুই কানের পিঠ ও বাহির দিক মাসাহ্ করবে।
(আবূদাঊদ, সুনান ৯৯, ১২৫নং)
প্রকাশ যে, গর্দান মাসাহ্ করা বিধেয় নয়। বরং এটা বিদআত।
১০- অতঃপর প্রথমে ডান পা ও পরে বাম পা গাঁট পর্যন্ত ৩ বার করে
রগড়ে ধোবে। কড়ে আঙ্গুল দ্বারা পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকগুলো
খেলাল করে রগড়ে ধৌত করবে। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান,
ইবনে মাজাহ্, সুনান, মিশকাত ৪০৭নং)
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, “পূর্ণাঙ্গরুপে ওযু কর, আঙ্গুলের ফাঁকগুলো
খেলাল কর আর রোযা না থাকলে নাকে খুব ভালরুপে পানি চড়াও।
(তারপর তা ঝেড়ে ফেলে উত্তমরুপে নাক সাফ কর।) (আবূদাঊদ, সুনান,
তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, দারেমী, সুনান,
মিশকাত ৪০৫-৪০৬ নং)
১১- এরপর হাতে পানি নিয়ে কাপড়ের উপর থেকে শরমগাহে ছিটিয়ে
দেবে। বিশেষ করে পেশাব করার পর ওযু করলে এই আমল অধিকরুপে
ব্যবহার্য। যেহেতু পেশাব করে তাহারতের পর দু-এক কাতরা পেশাব
বের হওয়ার অসঅসা থাকে। সুতরাং পানি ছিটিয়ে দিলে ঐ অসঅসা
দূর হয়ে যায়। (আবূদাঊদ, সুনান ১৫২-১৫৪, ইবনে মাজাহ্, সুনান
৩৭৪-৩৭৬নং) এই আমল খোদ জিবরাঈল (আঃ) মহানবী (সাঃ) কে
শিক্ষা দিয়েছেন। (ইবনে মাজাহ্, সুনান, দারেমী, সুনান,হাকেম,
মুস্তাদরাক, বায়হাকী, আহমাদ, মুসনাদ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী
৮৪১নং)
স্বালাতে মুবাশ্শির
পবিত্রতা
আবদুল হামীদ ফাইযী
No comments